রাজশাহীতে বিএনপি নেতা আবু সাঈদের ৩ বছরের সাজা

 



১৬ বছর আগে অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ ওরফে চাঁদকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এর বিচারক মারুফ আল্লাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আবু সাঈদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন - রাস্তায় পানি জমলে গাড়ি চালানোর সময় যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে বলা হয়েছে, জেলার চারঘাট উপজেলার বামুনদিঘি চকঝিরা টেকনিক্যাল স্কুলে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মামলার বিবাদীরা পরস্পর যোগসাজশে ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ঘটনাটি ২০০৭ সালের। এ ঘটনায় উপজেলার চকগোচর গ্রামের মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি আদালতে এ মামলা করেন। তখন আবু সাঈদ শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। 

মামলায় ১ নম্বর বিবাদী করা হয় আবু সাঈদকে। অপর দুই বিবাদীর একজন ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলিম উদ্দিন। অপরজন নাওদাড়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ওয়াস নবী। তিনি ঘটনার সময় বামুনদিঘি চকঝিরা টেকনিক্যাল স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন। টাকা দেওয়ার পর চাকরি না পেয়ে প্রতারিত হয়ে ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা প্রথমে থানায় মামলা করতে যান। থানায় মামলা না নিলে তাঁরা আদালতে মামলা করেন বলে আরজিতে বলা হয়েছে।


আজ বিকেলে মামলার রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী পারভেজ তৌফিক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ন্যায় বিচার পাননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেল এ আদালতে ন্যায় বিচার পাবেন না, এ মর্মে তাঁরা আদালত পরিবর্তন করার জন্য দুই দফা উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। এ ছাড়া মামলাটি বাদী–বিবাদীর মধ্যে মীমাংসা হয়ে গেছে। এ–সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র আদালত দাখিল করা হয়েছে। আদালত তা আমলে না নিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন।



এ বিষয়ে আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আহসান হাবীব বলেন, এ মামলায় ভিকটিম ২২ জন। তাঁদের মধ্যে বাদী শুধু একজন। তিনি আপস করেছেন। কিন্তু অন্যরা সংক্ষুব্ধ ছিলেন। দুজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা চালানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত সেটি মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া আপসনামা বিবেচনায় নেওয়া বা না নেওয়ার ব্যাপারে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত রয়েছে। তিনি বলেন, মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের জন্য তারা যে আবেদন করেছিলেন, তা উচ্চ আদালত খারিজ করে দিয়েছেন।


চলতি বছরের ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে একটি জনসভায় বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার কারণে পুঠিয়া থানায় মামলা হলে আবু সাঈদকে ২৫ মে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বক্তব্য কেন্দ্র করে রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য জেলায় আবু সাঈদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৭টি মামলা হয়। এসব মামলায় তিনি কারাগারে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে ৭৩টি মামলা চলমান বলে বিএনপির পক্ষ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post